
প্রধান শিক্ষক
রনজিৎ বড়ুয়া
দেশ ও সমাজের অনাথ, এতিম, গরীব, দুঃস্থ জনগণের কল্যাণে অবিদ্যা, অজ্ঞানতা দূরীকরণে জ্ঞানচর্চা বা শিক্ষার বিকল্প নেই। বিশেষতঃ সমাজে নারী শিক্ষার বিকাশে শিক্ষা একান্ত অপরিহার্য। একজন মেয়ে বা মাকে সুশিক্ষিত করতে পারলে সমগ্র পরিবার পর্যায়ক্রমে সমাজ, গ্রাম ও দেশ সুশিক্ষিত হয়। যেহেতু দেশের জনসংখ্যার অর্ধাংশ নারী। অতএব, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বঙ্গ পাক-ভারত উপমহাদেশের প্রাজ্ঞ বৌদ্ধ ভিক্ষু ব্যক্তিত্ব সৌগতসূর্য সংঘনায়ক অগ্রসার মহাথের’র নামে বিগত ১৯৬৭ ইংরেজীতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য বৌদ্ধ মনীষা, কর্মবীর, কর্মযোগী, ২৪ তম মহাসংঘনায়ক শ্রী সদ্ধর্মভাণক প্রয়াত বিশুদ্ধানন্দ মহাথের প্রথমে নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৭ ইংরেজীতে একে উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। তা ‘অগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয় উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে আত্ম প্রকাশ করে এবং ১৯৭৮ সালে সরকারী স্বীকৃতি ও অনুদান লাভ করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিবিধ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এ প্রতিষ্ঠান এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানের গৌরব ও সুখ্যাতি ইতিমধ্যে দেশ ও সমাজের সীমানা পেরিয়ে বিশ্ব পরিমন্ডলে পরিব্যাপ্তি হয়েছে।
অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বিশ্বায়নের যুগে ছাত্র ছাত্রীদের জীবন জীবিকা তথা আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে স্কুলে ২০০২ সনে কম্পিউটার কোর্স চালু করা হয়েছে। বর্তমানে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীরা কম্পিউটার বিষয়েও জ্ঞান লাভ করতে সমর্থ হবে। মানব শিশুর বিকাশে বংশগতির প্রভাব অনস্বীকার্য হলেও পরিবেশের প্রভাব কম নয়। বরং উন্নত পরিবেশ সমগ্র সমাজব্যবস্থার চাবিকাঠি। তাঁর জন্য চাই সার্বজনীন শিক্ষা, সুশিক্ষা এবং উন্নত পরিবেশ ও আদর্শ শিক্ষায়তন। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষকরাই জাতির নির্মাতা। অভিভাবকরাই জাতির উর্বর ক্ষেত্র এবং আগামী প্রজন্মের মানব-শিশুরাই সে ক্ষেতের সোনালী ফসল।
এ সুবর্ণ ভূমিতে সোনালী সুফসল পেতে হলে চাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সুসমন্বিত প্রয়াস ও আন্তরিক নিবিড় সম্পর্ক। এ দায়িত্ব শিক্ষক-অভিভাবকের আমাদের সকলের। তাই আসুন আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় সন্তানদের আদর্শ ও চরিত্রবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হই। এ সম্পর্ককে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করার মানসেই প্রবর্তন করেছি “শিক্ষার্থী দিনলিপি” ব্যবস্থা। এতে রয়েছে- একজন শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে উপস্থিতি, অনুপস্থিতি, পাঠোন্নতিসহ পাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর সাফল্য-অংশগ্রহণ, দৈনন্দিন কর্মতৎপরতা, বেতন ও অন্যান্য পাওনার লেন-দেন হিসাব। এতে শিক্ষক অভিভাবকের মতামত/পরামর্শ বিনিময় ইত্যাদি বিষয়্বও উৎকীর্ণ থাকবে।
আমরা আশা করি, দায়িত্ববান অভিভাবক নিয়মিত এ দিনলিপি পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষার্থী সম্পর্কে শিক্ষকের মূল্যায়ন ও পরামর্শ জানাবেন, নিজ প্রতিপাল্যের বিদ্যালয় কর্মকান্ড সম্পর্কে অবহিত হবেন এবং প্রয়োজনে শিক্ষকের সাথে মত বিনিময় করবেন। এতে আপনার সন্তানের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিক-নির্দেশনা আমাদের পক্ষে সহজতর হবে।
পরিশেষে, মহাকারুণিকের কাছে প্রার্থনা, আমাদের সুসমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে শিক্ষার্থী যেন লেখাপড়া শিখে জীবনে সুনাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা অর্জন করে এবং নিজের পরিবারের, বিদ্যালয়ের, সমাজের তথা দেশ ও জাতির গৌরব বয়ে আনতে সক্ষম হয়।
রনজিৎ বড়ুয়া
প্রধান শিক্ষক/ সম্পাদক
অগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয় উচ্চ বিদ্যালয়
পূর্ব গুজরা হোয়ারাপাড়া, রাউজান, চট্টগ্রাম।
Facebook Comments